পানির নিচে বাঙ্গাবাড়ী, সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা
ডেস্ক রিপোর্ট: রাস্তায় বের হলেই এখানে ওখানে উপচে পড়া পানি এবং হাঁটু পানির নিচে রাস্তা বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের এখন সাধারন একটা দৃশ্য। কারো কারো বাড়ি থেকে বের হয়ে এক হাঁটু পানি ভেঙে তারপরে যেতে হচ্ছে কোথাও। বাড়ির বৃদ্ধ, মেয়ে, শিশুদের ক্ষেত্রে তাও সম্ভব হচ্ছে না।
খোদ, বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন কার্যালয় এর সামনে এক হাঁটু পানি। সামান্য রাস্তা দিয়ে ইঁট বিছিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে যাতায়াত করতে হয়। বাঙ্গাবাড়ী এর অন্যতম প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাঙ্গাবাড়ী ইউনূস স্মরণী স্কুল ও কলেজ মাঠে একটু বৃষ্টি হলেই এক হাঁটু পরিমান পানি জমে থাকে। সেই ছবি আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিদিন ই প্রায় দেখছি, গালমন্দ করছি, মজা নিচ্ছি। গোয়াল মোড় রাস্তার কালভার্ট বন্ধ নিয়ে একাধিক পত্রপত্রিকায় খবর আসছে এবং প্রশাসনিক পর্যায়ে পর্যন্ত ব্যাপার টা গড়িয়েছে। বাঙ্গাবাড়ী এর প্রধান বাজার তেলীপাড়া বাজারে আসার প্রতিটা রাস্তায় হাঁটু পরিমান পানি পাড়া দিয়ে তারপরে আসতে হয়। সন্তোষপুর কামাত এর কমিউনিটি ক্লিনিক এর অবস্থা অনেকটা সংসদ ভবনের চারপাশের লেকের মতো হয়েছে।
কিন্তু কেনো এই জলাবদ্ধতা?
বৃষ্টি যে আগের থেকে বেশি হচ্ছে তা কিন্তু না। আর সমস্যা যে এই এক বছরে হঠাৎ করে চলে আসছে তাও কিন্তু না। এই সমস্যা গত কয়েক বছরে একটু একটু করে বাড়তে বাড়তে এই বছর প্রায় গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে চোখে পড়ছে।
বাঙ্গাবাড়ী এর পানি নিষ্কাষন ব্যবস্থা আদি কাল থেকেই প্রায় ব্যক্তিগত পুকুর বা গড়হ্যা নির্ভর। মানুষ আগে বাড়ি করার জন্য বা রাস্তা উচুঁ করার জন্য নিজ ভিটা জমিতে গর্ত করতো। প্রায় প্রতিটা বড় বাড়ির পাশেই ছোট বড় পুকুর থাকতো। আশে পাশের সব পানি সেসব পুকুরে গিয়ে জমা হতো। যত দিন যাচ্ছে মানুষের পরিবারের সদস্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, তারা আর্থিক ভাবে সচল হওয়ার সাথে সাথে এসব গর্ত ভর্তি করে সন্তানদের জন্য বাড়ি বানাচ্ছে, মার্কেট তৈরি করছে, জমি হাতবদল হওয়ায় নতুন জমির মালিক তার নতুন জায়গায় নতুন করে ঘর তুলছে।
আগে যেখানে ১০-১২ টা পুকুর ছিলো, সেখানে ১-২ টা পুকুর হয়তো বেঁচে আছে, কিন্তু বৃষ্টির পানি কমেনি। উদাহরন হিসেবে বাঙ্গাবাড়ী স্কুল ও কলেজ এর পূর্ব দিকেই প্রায় ৩ টা বড় বড় গর্ত ছিলো, এখন তার মাত্র একটা ছোট্ট অংশই গর্ত হিসেবে আছে এবং সেটাতেও পানি কানায় কানায় ভর্তি, এখন যখন লিখছি তখন সে পানি উপচে বাঙ্গাবাড়ী প্রবেশের প্রধান রাস্তা ডুবিয়ে রেখেছে। স্কুল ও কলেজ এর পশ্চিম পাশে বুজরুক আলী মেম্বার, লাইসান চেয়ারম্যান এর বাড়ির পাশ দিয়ে পাইহ্যা পাড়া পর্যন্ত টানা গর্ত ছিলো। এখন সব বন্ধ হয়ে এক দুইটা মাত্র গর্ত তে পানি জমা হয়। পানি জমা হয়ে স্কুলের ক্লাশরুম পর্যন্ত পানি ঢুকে পড়ছে।
জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় প্রশাসন সমন্বিত উদ্যগ নিয়ে পানি নিষ্কাষনের স্থায়ী ড্রেইনেজ ব্যবস্থা না করলে এই গলার কাঁটা সামনে ২-১ বছরে ফাল হয়ে দাঁড়াবে। তখন দ্বিগুন পরিমান অর্থ ব্যয় হবে এবং দূর্ভোগ ও বাড়বে কয়েকগুন পরিমান। নাগরিক দুর্ভোগ দূর করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধী পর্যায় থেকে ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন জানাই।
*** সংবাদে প্রকাশিত তথ্যসমূহ একাধিক সূত্র থেকে সংগ্রহ এবং যাঁচাই করে প্রকাশিত হয়েছে।